মধ্যবিত্তের জীবন ✨💔
স্বপ্নের পথচলা: 🌱
ফিরোজের জীবনের গল্পটা হাজারো মধ্যবিত্ত ছেলের মতোই—হাসি-কান্না, স্বপ্ন আর বাস্তবতার দোলাচলে ভরা।
ছোটবেলা থেকেই সে স্বপ্ন দেখত বড় কিছু করার। বাবা একজন সাধারণ কৃষক , মা গৃহিণী। সংসারে বেশি চাওয়া-পাওয়ার সুযোগ ছিল না, কিন্তু মা সবসময় বলতেন, "শিক্ষাই তোমার সবচেয়ে বড় সম্পদ।"
ফিরোজ খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করত। ক্লাসের ফার্স্টবয় ছিল, শিক্ষকরাও বলতেন, "এই ছেলে একদিন অনেক বড় হবে!" কিন্তু জীবনের কঠিন বাস্তবতা তখনও তাকে চিনিয়ে দেয়নি নিজের আসল পরিচয়।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিকে আসতেই বুঝতে পারল, সার্টিফিকেট থাকলেই সব হয় না। চাকরির বাজার ভয়ঙ্কর প্রতিযোগিতার, আর মধ্যবিত্তদের জন্য সুযোগ আরও সংকীর্ণ। একটার পর একটা ইন্টারভিউ দিলেও চাকরি মিলছিল না।
চাকরি, সংসার, এবং চাপ 🏢💼
বাবার অবসরের পর সংসারের সমস্ত দায়িত্ব চলে আসে ফিরোজের কাঁধে। বাবার ছোট খাটো মুদি দোকান ছিল তা টুকটাক করে চালায়।ইনকাম তেমন হতো না মাসে ৪০০০-৫০০০।
মাসের প্রথম সপ্তাহেই বাড়ির ভাড়া, বাজার, ছোট বোনের পড়াশোনার খরচ দিয়ে হাতে কিছুই থাকে না। মা শুধু বলেন, "কোনো চিন্তা করিস না বাবা, আল্লাহ ভরসা।" কিন্তু ফিরোজ জানে, শুধু ভরসায় সংসার চলে না।
প্রতিদিন সকাল আটটায় বের হয়, রাত আটটায় ফেরে। অল্প পুঝি আর বাকির চাপে ফিরোজ হাজার টেনশনে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ফিরে দেখে, মায়ের হাতে থাকা হিসাবের খাতা—"এ মাসের বিদ্যুৎ বিল একটু বেশি এসেছে, কী করবি?"
মধ্যবিত্তদের জীবন এমনই—সময়ের আগে বুড়িয়ে যাওয়া, ইচ্ছেগুলোকে প্রতিদিন মেরে ফেলা।
প্রেম, বাস্তবতা, এবং ত্যাগ :💔😔
ফিরোজের জীবনে একজন বিশেষ মানুষ ছিল— আশা।
কোনো এক বিয়ার অনুষ্ঠানে তাদের পরিচয়। আশা তাকে খুব ভালোবাসত, কিন্তু তার পরিবার চাইত না যে সে একজন "সাধারণ" মুদি দোকান দার ছেলের সঙ্গে জীবন কাটাক।
একদিন আশা ফোন করে বলল, "ফিরোজ, আমাদের আর সম্ভব নয়। বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন। ছেলেটা ভালো চাকরি করে, বিদেশে সেটেলড। আমি কিছু করতে পারলাম না।"
ফিরোজ কিছুই বলতে পারল না। শুধু ফোনের ওপাশ থেকে একটা গভীর নিঃশ্বাসের শব্দ শুনল।
সেই রাতে আর ঘুম আসেনি। মধ্যবিত্তদের প্রেমও মধ্যবিত্ত হয়—শুরু হয় স্বপ্ন দিয়ে, শেষ হয় বাস্তবতায়।
জীবন বদলের লড়াই :🔥📈
একদিন দোকান চুরি হলো, "অনেক মুরুব্বি বলে ফিরোজ তুমি তো টাকার সংকটে পড়ে গেলা। ফিরোজ দোকান ভাড়া বিদ্যুৎ বিল বাড়ি খরচ চালাতে হিমসিক খেলো।
ফিরোজ মাথা নিচু করে বসে রইল। দোকান চুরি হয়ে গেল কী করবে? এই বাজারে অল্প পুজি নিয়ে ব্যবসা করা কি এতই সহজ?
কিন্তু সে হাল ছাড়েনি। বাজার থেকে ফিরে রাত জেগে ইউটিউব ঘেঁটে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং শেখা শুরু করল। টুকটাক কাজ পেত, অল্প অল্প ইনকাম আসত।
তিন মাস পর একটা আবার পেজ ক্রিয়েট করলো কন্টেন্ট ছাড়া শুরু করে তারপর একটু একটু করে পেজটা বড় হতে থাকে লাস্ট পর্যন্ত সফল হওয়ার কাছাকাছি গিয়েও হাল ছাড়া ভাব হয় তারপরেও কাজ চালিয়ে যায় সফল একদিন হবো ✨
তখনই সিদ্ধান্ত নিল—এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের ক্রীতদাস হয়ে আর থাকা যাবে না। এসব ভেবে তারপরও কাজে চেষ্টা করা শুরু করে ।"
অনেকের চোখ কপালে! এমনটা সে কেউ ভাবতে পারেনি।
ফিরোজ একদিন অনেক বড় হবে হাল ছাড়ে নি।
নতুন ভোর, নতুন জীবন: 🌅✨
ছয় মাস পর...
আজ ফিরোজ সফল একজন অভিনেতা। নিজের জন্য একটা ছোট অফিস নিয়েছে, যেখানে সে আরও কয়েকজন বেকার যুবককে কাজ শেখাচ্ছে।
মায়ের জন্য নতুন শাড়ি কিনেছে, ছোট বোনের জন্য একটা ভালো কোচিংয়ের ব্যবস্থা করেছে।
আজ সে ব্যালেন্স দেখে চিন্তিত হয় না, ঘুমাতে যাওয়ার সময় মনে হয় না, "কাল কী হবে?"
একদিন আশা তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে ফিরোজের ছবি দেখে মেসেজ দিল, "আমি গর্বিত তোমার জন্য।"
ফিরোজ শুধু হাসল। কিছু উত্তর দেয়নি।
কারণ মধ্যবিত্ত ছেলেরা শিখে যায়—হারানোর হিসাব কষে লাভ নেই, শুধু এগিয়ে যেতে হয়। 🔥
শেষ কথা:
মধ্যবিত্ত ছেলেরা স্বপ্ন দেখে, কাঁদে, ভাঙে, আবার জোড়া লাগে। তারা প্রেমে ব্যর্থ হয়, চাকরিতে অপমানিত হয়, পরিবারকে বাঁচাতে নিজের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দেয়। কিন্তু একদিন ঠিকই ঘুরে দাঁড়ায়। কারণ তাদের পায়ের নিচে কঠিন বাস্তবতার মাটি থাকে, আর বুকের ভেতর আগুন! 🔥💪
Comments
Post a Comment